যখন–তখন প্রস্রাব হয়ে যায়?

জীবনের একটি পর্যায়ে গিয়ে প্রস্রাবের চাপ অনুভব করা মাত্র খানিকটা প্রস্রাব বেরিয়ে যাওয়ার সমস্যা অনেকেরই হয়। কারও আবার হাঁচি–কাশির সময় সামান্য প্রস্রাব বেরিয়ে যাওয়ার সমস্যা হয়। এই সমস্যা খুবই বিব্রতকর। নারীদের এমন সমস্যায় ভোগার হার বেশি হলেও নারী-পুরুষ সবারই এ বিষয়ে সতর্ক থাকা প্রয়োজন। আর এই সতর্কতা কম বয়স থেকেই অবলম্বন করা দরকার।

পর্যাপ্ত পানি ও শাকসবজি খান

প্রতিদিন পর্যাপ্ত পানি ও শাকসবজি খেতে হবে। তাতে আপনি সহজে কোষ্ঠকাঠিন্য এড়াতে পারবেন। আপনি হয়তো ভাবছেন, এর সঙ্গে প্রস্রাব নিয়ন্ত্রণের সম্পর্ক কোথায়? সম্পর্ক আছে। মলদ্বারের আশপাশের পেশিগুলো দিয়েই নিয়ন্ত্রিত হয় আমাদের মলমূত্র। কোষ্ঠকাঠিন্যে ভুগলে এই পেশিগুলোর ওপর অতিরিক্ত চাপ পড়ে। দীর্ঘদিন কোষ্ঠকাঠিন্য থাকলে এই পেশিগুলো সেই বাড়তি চাপের কারণে দুর্বল হয়ে পড়ে। ফলে পরে প্রস্রাব নিয়ন্ত্রণ করা মুশকিল হতে পারে।

প্রস্রাব আটকে রাখবেন না

চাপ অনুভব করার পরও অনেক সময় আমরা প্রস্রাব আটকে রাখি। বিশেষত নারীরা ঘরের বাইরে অস্বস্তিকর পরিবেশের কারণে দীর্ঘ সময় প্রস্রাব আটকে রাখেন। কিন্তু এই অভ্যাসের কারণে একদিকে বাড়ে মূত্রতন্ত্রের সংক্রমণের ঝুঁকি, অন্যদিকে আবার মূত্রাশয়ের পেশির ওপরও অস্বাভাবিক চাপ পড়ে। এসব কারণে প্রস্রাব নিয়ন্ত্রণ বাধাগ্রস্ত হতে পারে। তাই প্রস্রাব আটকে রাখা একেবারেই অনুচিত।

নির্দিষ্ট ব্যায়াম

প্রস্রাবের নিয়ন্ত্রণ স্বাভাবিক রাখার ব্যায়াম অনুশীলন করতে পারেন। দাঁড়ানো, বসা, এমনকি শোয়া অবস্থায়ও এই ব্যায়াম করা যায়। প্রস্রাব-পায়খানা আটকে রাখার জন্য যেভাবে নির্দিষ্ট পেশির অভ্যন্তরে আমরা চাপ দিই, সেভাবে তিন সেকেন্ড চাপ ধরে রাখাই হলো এই ব্যায়ামের প্রথম ধাপ। এরপর তিন সেকেন্ড পেশি শিথিল রাখুন। আবার তিন সেকেন্ড চাপ রাখুন। এভাবে বেশ কয়েকবার পুনরাবৃত্তি করুন। রোজ তিন থেকে চারবার এই ব্যায়াম করা যায়।

আরও কিছু বিষয়

ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন। বাড়তি ওজনের কারণেও প্রস্রাবের নিয়ন্ত্রণ বাধাগ্রস্ত হয়।

ধূমপান বর্জন করুন। এটি কেবল ফুসফুসের জন্যই ক্ষতিকর নয়; বরং কিডনি ও মূত্রাশয়ের ওপরও এর বিরূপ প্রভাব পড়ে।

যেকোনো কারণে দীর্ঘমেয়াদি কাশি হলে চিকিৎসা নিন। দীর্ঘদিনের প্রবল কাশির চাপেও প্রস্রাব নিয়ন্ত্রণের পেশি দুর্বল হয়ে যায়।

সন্তান জন্মের সময় অবহেলা নয়

সন্তান প্রসবের সময় জরায়ু ও আশপাশের পেশির ওপর ভুলভাবে চাপ প্রয়োগ করা হলে এই পেশিগুলো দুর্বল হয়ে যায়। এর ফলে পরে প্রস্রাবের নিয়ন্ত্রণ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। তাই গর্ভকালীন চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে থাকা জরুরি। প্রত্যেক নারীরই প্রসব হতে হবে প্রশিক্ষিত ব্যক্তির তত্ত্বাবধানে। স্বাভাবিক প্রসব যদি ঝুঁকিপূর্ণ হয়, সে ক্ষেত্রে সঠিক সময়ে অস্ত্রোপচার করিয়ে নিলে মা ও শিশু দুজনই নিরাপদ থাকবে। প্রসব–পরবর্তী সময়েও প্রসবের ধরন অনুযায়ী নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত ভারী কাজ এড়িয়ে চলা আবশ্যক। নইলে প্রস্রাবের নিয়ন্ত্রণ হারানোর ঝুঁকি থাকে।

Your Ads

Ready to take your business to the next level?

Share it :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Your Ads

Ready to take your business to the next level?