বাংলাদেশে প্রতি চার প্রাপ্তবয়স্কের একজন উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত!

বাংলাদেশে প্রতি চারজন প্রাপ্তবয়স্কের একজন উচ্চ রক্তচাপে ভুগছেন বলে বিশেষজ্ঞরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। রবিবার বিশ্ব হৃদয় দিবস ২০২৪ উপলক্ষে ‘উচ্চ রক্তচাপ এবং হৃদরোগের ঝুঁকি’ শীর্ষক এক ওয়েবিনারে এই উদ্বেগজনক তথ্য তুলে ধরা হয়।
প্রগতির জন্য জ্ঞান (প্রগ্গা) গ্লোবাল হেলথ অ্যাডভোকেসি ইনকিউবেটর (জিএইচএআই)-এর সহায়তায় আয়োজিত এই ওয়েবিনারে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ এবং হৃদরোগ বিশেষজ্ঞরা বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আলোচনা করেন। এ বছর বিশ্ব হৃদয় দিবসের প্রতিপাদ্য ‘কাজের জন্য হৃদয় ব্যবহার করুন’।

ওয়েবিনারে বক্তারা বলেন, বিশ্বব্যাপী মৃত্যুর প্রধান কারণ হৃদরোগ, এবং উচ্চ রক্তচাপ এই রোগের অন্যতম ঝুঁকির কারণ। বাংলাদেশে মোট মৃত্যুর ৩৪ শতাংশ হৃদরোগজনিত, যার একটা বড় অংশ প্রতিরোধযোগ্য।
বিশেষজ্ঞদের মতে, সাধারণ মানুষের কাছে উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ সহজলভ্য করতে পারলে হৃদরোগের ঝুঁকি অনেকটা কমানো সম্ভব।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) ২০২৩ সালের উচ্চ রক্তচাপ সংক্রান্ত প্রথম বিশ্বব্যাপী প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশে প্রতিবছর ২ লাখ ৭৩ হাজার মানুষ হৃদরোগে মারা যান। এই মৃত্যুর ৫৪ শতাংশের জন্য উচ্চ রক্তচাপ দায়ী।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্তদের অর্ধেক (৩০-৭৯ বছর বয়সী) তাদের অবস্থা সম্পর্কে জানেনই না।

জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের প্রাক্তন পরিচালক ও স্বাস্থ্য খাত সংস্কার বিষয়ক বিশেষজ্ঞ প্যানেলের সদস্য সচিব ডা. আব্দুল্লাহ আল শফি মজুমদার বলেন, উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সচেতনতা কার্যক্রম বৃদ্ধিসহ অন্যান্য পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।

জাতীয় হৃদরোগ ফাউন্ডেশনের মহামারী বিদ্যা এবং গবেষণা বিভাগের প্রধান ডা. সোহেল রেজা চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে অকাল মৃত্যুর ৪০ শতাংশের বেশি হৃদরোগজনিত। উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণই এই মৃত্যুহার কমানোর সবচেয়ে কার্যকর উপায়।

ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্র্যাক জেমস পি গ্রান্ট স্কুল অফ পাবলিক হেলথের অধ্যাপক ডা. মলয় কান্তি মৃধা বলেন, সারাদেশে উচ্চ রক্তচাপের প্রকোপ সঠিকভাবে নির্ধারণের জন্য অঞ্চল, বয়স এবং লিঙ্গ ভিত্তিক গবেষণা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

জিএইচএআই-এর বাংলাদেশ কান্ট্রি লিড মুহাম্মদ রুহুল কুদ্দুস বলেন, সাধারণ মানুষের কাছে উচ্চ রক্তচাপের ওষুধের সরবরাহ নিশ্চিত করতে হলে সারাদেশে উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা নির্ধারণ করা জরুরি।

বারডেম জেনারেল হাসপাতালের ডায়েট এবং পুষ্টি বিভাগের প্রধান শামসুন্নাহার নাহিদ বলেন, উচ্চ রক্তচাপ এবং হৃদরোগ নিয়ন্ত্রণের জন্য স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস অপরিহার্য।

প্রগ্গার কার্যনির্বাহী পরিচালক এবিএম জুবায়ের ওয়েবিনারে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। প্রগ্গার সমন্বয়ক সাদিয়া গালিবা প্রভা উচ্চ রক্তচাপজনিত হৃদরোগের প্রকোপ বিষয়ে একটি মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন এবং ওয়েবিনারটি সঞ্চালনা করেন।

Your Ads

Ready to take your business to the next level?

Share it :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Your Ads

Ready to take your business to the next level?