কেন স্ত্রীর সাথে ঘনিষ্ঠতায় পুরুষের আগ্রহ কম!

বর্তমানে একটি উদ্বেগজনক প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, অনেক পুরুষ তাদের সঙ্গীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হতে আগ্রহ হারাচ্ছেন। বিষয়টি শুধুমাত্র মানসিক বা শারীরিক ক্লান্তির মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়; এর সঙ্গে আরও গভীর কিছু কারণ জড়িত।

অনেক সময় দেখা যায়, কর্মজীবনের চাপে ক্লান্ত হয়ে বাড়ি ফিরে পুরুষরা সঙ্গীকে জানান, “আমি খুব ক্লান্ত, আমার কোনো ইচ্ছা নেই।” কিন্তু এর পরেও তারা হয়তো পর্ন দেখছেন বা মাস্টারবেশন করছেন। এই দ্বৈত আচরণ শুধু তাদের সঙ্গীর সঙ্গে দূরত্ব বাড়াচ্ছে না, সম্পর্কেও প্রভাব ফেলছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, শারীরিক আকর্ষণের অভাব নয়, বরং সম্পর্কের প্রতি “গ্রান্টেড” মনোভাব অনেক সময় এই সমস্যার মূল কারণ হয়ে দাঁড়ায়। বিয়ের পর বা দীর্ঘ সম্পর্কের মধ্যে থেকে একে অপরকে নতুন করে আবিষ্কার করার চেষ্টার অভাব দেখা দেয়। সঙ্গীকে বিশেষভাবে দেখানোর বা প্রেজেন্ট করার আগ্রহ হারিয়ে ফেলে অনেকেই। ফলস্বরূপ, সঙ্গীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার অভাব তৈরি হয়।

সমস্যার কারণগুলো কী?
১. পর্ন এবং মাস্টারবেশনের উপর নির্ভরশীলতা:
নিয়মিত পর্ন দেখার কারণে বাস্তবিক সম্পর্কের প্রতি আগ্রহ কমে যেতে পারে। এটি একটি মনস্তাত্ত্বিক এবং শারীরিক অভ্যাস তৈরি করে, যা বাস্তব জীবনের ইমোশনাল সংযোগ এবং ঘনিষ্ঠতাকে দুর্বল করে।

২. ক্লান্তি এবং স্ট্রেস:
দৈনন্দিন কাজের চাপে অনেকেই শারীরিক এবং মানসিকভাবে ক্লান্ত হয়ে পড়েন। তবে এটি যদি দীর্ঘস্থায়ী হয়, তাহলে সঙ্গীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হওয়ার ইচ্ছাও কমে যেতে পারে।

৩. সম্পর্ককে ‘গ্রান্টেড’ মনে করা:
অনেক সময় দীর্ঘ সম্পর্কের মধ্যে মানুষ মনে করে, “ও তো আমার পাশেই আছে। নতুন কিছু করার দরকার নেই।” এই মনোভাব সম্পর্ককে একঘেয়ে করে তোলে।

৪. দুই পক্ষের দূরত্ব এবং গ্যাপ:
দীর্ঘ সময় সঙ্গীর সঙ্গে মানসিক বা শারীরিক সংযোগ না থাকলে ধীরে ধীরে দূরত্ব বাড়ে।

কী করা যেতে পারে?
এক্ষেত্রে সমস্যার সমাধান করতে হলে উভয়েরই উদ্যোগী হওয়া প্রয়োজন।

১. খোলামেলা আলোচনা করুন:
সঙ্গীর সঙ্গে এই বিষয়ে খোলাখুলি কথা বলুন। সমস্যার গভীরে যাওয়ার চেষ্টা করুন এবং একে অপরের দৃষ্টিভঙ্গি বুঝুন।

২. সেক্সকে নতুন করে আবিষ্কার করুন:
একঘেয়েমি কাটাতে নতুন কিছু করার চেষ্টা করুন। একে অপরকে চমকে দিন। ছোট ছোট রোমান্টিক মুহূর্ত তৈরি করুন।

৩. পর্ন এবং মাস্টারবেশনের উপর নির্ভরশীলতা কমান:
অতিরিক্ত পর্ন দেখা বন্ধ করুন। বাস্তবিক সংযোগে মনোযোগ দিন।

৪. মানসিক এবং শারীরিক যত্ন নিন:
ক্লান্তি বা স্ট্রেস কমানোর জন্য ব্যায়াম, মেডিটেশন, বা কোনো রিলাক্সেশন টেকনিক ব্যবহার করুন। সঙ্গীর সঙ্গে ভালো সময় কাটানোর চেষ্টা করুন।

৫. প্রফেশনাল সাহায্য নিন:
যদি সমস্যা গভীর হয়, তাহলে একজন থেরাপিস্ট বা সম্পর্ক বিশেষজ্ঞের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।

একসঙ্গে সমস্যার সমাধান
যেকোনো সম্পর্ক দুই পক্ষের প্রচেষ্টায় টিকে থাকে। একে অপরকে বুঝতে এবং সম্পর্ককে আরও মজবুত করতে, নিয়মিত সময় এবং যত্ন দেওয়া প্রয়োজন। একঘেয়েমি কাটিয়ে সম্পর্ককে নতুন করে উদযাপন করাই হতে পারে ঘনিষ্ঠতার ঘাটতি কাটানোর সঠিক উপায়।

Your Ads

Ready to take your business to the next level?

Share it :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Your Ads

Ready to take your business to the next level?